গ্রীষ্মের শুরুতেই রাজশাহীর গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই অকেজো হয়ে পড়েছে অসংখ্য নলকূপ। যে নলকূপগুলো ভালো আছে সেগুলোতেও ভালোভাবে পানি উঠছে না।

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারিভাবে সাড়ে তিন হাজার নলকূপ আছে। এছাড়া বিভিন্ন এনজিওর উদ্যোগে স্থাপন করা হয়েছে আরো দুই হাজার নলকূপ।

এগুলো স্থাপনের কিছুদিন পরই অকেজো হয়ে পড়ে। পরে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো মেরামতের জন্য অর্থ না দেওয়ায় পুরো গ্রীষ্ম মৌসুমে নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জনা যায়, বিশুদ্ধ পানির জন্য সবচেয়ে বেশী সমস্যার মধ্যে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল ও আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলোর মানুষ। বরেন্দ্রর অন্তত ২৩০টি আদিবাসী গ্রামের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫টি গ্রামে নলকূপ রয়েছে।

অন্য গ্রামগুলোর ভরসা পুকুর ও জলাশয়ের দুষিত পানি। তবে গভীর নলকূপগুলোতে তেমন পানি না উঠায় ও বোরো আবাদের ফসল বাঁচাতে পুকুর থেকে সেচের জন্য স্যালো মেশিনের সাহায্যে পানি উঠানোতে পুকুর জলাশয়ও এখন পানি শূন্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলার আদারপাড়া গ্রামে ৩০টি পরিবার বসবাস করলেও সরকারিভাবে নলকূপ বসানো হয়েছে মাত্র একটি। জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই নলকূপটিতে পানি উঠছে কম। খরা আরও বৃদ্ধি পেলে একেবারেই পানি উঠা বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসীর।

উপজেলার অন্যান্য গ্রামগুলোর প্রায় একই রকম চিত্র। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই আবার দুই/তিন কিলোমিটার পায়ে হেঁটে অন্যগ্রাম হতে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সেই পানি ব্যবহার করছেনা। গোসল, থালা-বাসন ধোয়া ও কাপড় ধোয়ার জন্য পুকুরের পানি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

অনেকেই আবার হাঁটার ভয়ে এক রকম বাধ্য হয়ে পুকুরের পানি সংগ্রহ করে ফুঁটিয়ে সেই পানি পান করছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অসিত কুমার বাংলানিউজকে জানান, উপজেলায় সরকারিভাবে প্রতিবছর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। চলতি বছর এখনো বরাদ্দ না পাওয়ায় নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু হয়নি।

Link