রাজশাহী: শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই পদ্মা নদী এখন পানিশূন্য। কিন্তু এরই মাঝে পানি শুকিয়ে ধু ধু বালুর মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে একসময়ের ক্ষরস্রোতা পদ্মা। পদ্মার প্রবেশদ্বার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বাংলাদেশি ভূখণ্ডে পদ্মায় পানি নেই বললেই চলে। আর পানি না থাকায় নদীতে মাছ ধরতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে পদ্মা পাড়ের জেলে পরিবারগুলো। পদ্মা নদীর বালুর স্তরে স্তরে আটকে আছে মাঝিদের নৌকা। বেশিরভাগ ধু ধু বালুচরে চলছে গরুর গাড়ি। অথচ বছর দশেক আগেও এই সময় পদ্মায় পানি থাকত। এখন তা শুধুই স্মৃতি।

২৬ ফেব্রুয়ারি রোববার একটি দৈনিকে প্রকাশিত ‘পদ্মা শুকিয়ে মরুভূমি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

জলরাশির অপার সৌন্দর্য হারিয়ে পদ্মা এখন ধু-ধু মরুভূমি। পদ্মার এই করুণ পরিণতিতে অনেক আগেই শুকিয়ে গেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের খাল-বিল, নদী-নালা। একই সঙ্গে দ্রুত নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। পদ্মা পানিশূন্য হওয়ার পাশাপাশি ভূগর্ভের পানির স্তরও নামছে নিচে। ঠিকমতো পানি মিলছে না গভীর নলকূপে। দেখা দিয়েছে সেচ ও পানীয় জলের সংকট।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, পদ্মা শুকিয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে মত্স্য সম্পদ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে গোটা বরেন্দ্র অঞ্চল। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে শুষ্ক মৌসুম শুরুর আগেই পানিশূন্য হয়ে যাচ্ছে পদ্মা। এর ফলে চর ও বরেন্দ্র এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে বৈরী আবহাওয়া। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের একদিকে যেমন স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে এর বিরূপ প্রভাব কৃষিতে পড়ায় মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বর্তমানে বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গড়ে ১১০ ফুট নিচে অবস্থান করছে। দিন দিন তা আরও নিচের দিকেই যাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলে হাজার হাজার গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী অঞ্চলে শুরু হয়ে গেছে জমিতে বোরো ধান লাগানোর কাজ। ভূগর্ভের পানি নিচে চলে যাওয়ায় পানি সংকট দেখা দিচ্ছে কৃষিকাজেও।

Link