পানির স্তর নিয়ে রিসার্চ বা গবেষণা করলেই ভূগর্ভস্থ পানির সমস্যা নিরসন করা সম্ভব নয়। এই সংকট দূরীকরণে আর্টিফিসাল রিসার্চের পাশাপাশি পদ্মা ও মহানন্দা নদী খননসহ খাড়ি-পুকুরগুলো ড্রেজিং করা প্রয়োজন। আর এজন্য সবার সমন্বিত উদোগ দরকার। ‘যেখানেই পানি সেখানেই ধরতে হবে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া ‘এনজি ফোরাম ফর পাবলিক হেল্থ’-এর উদ্যোগে ‘বরেন্দ্র অঞ্চলের পানির স্তর নিয়ে গবেষণা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের অফিসকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। ‘পাবলিক হেল্থ’ রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান সরদার।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসের সঞ্চালনায় এ সময় বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টির পানির মাধ্যমে কীভাবে পানি সমস্যা দূর করা যায় সে সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক আলোচনা তুলে ধরেন রাবি উপ-উপাচার্য ও ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান।
তিনি বরেন্দ্র অঞ্চলের বৃষ্টির পানি কীভাবে ধারণ করা যায় সে সম্পর্কে গবেষণামূলক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। খরাপ্রবণ অঞ্চলে বৃষ্টি পানি ধারণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং কীভাবে পানির স্বল্পতা দূর করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন। কর্মশালায় প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন- ‘এএসএসইডিও’র নির্বাহী পরিচালক মো. রবিউল
আলম, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আকবারুল হাসান মিল্লাত ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়ামুল বারী।
বক্তারা বলেন, যেখানেই পানি স্বল্পতা দেখা দিয়েছে সেখানেই সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে। বরেন্দ্র অঞ্চলও সেই দিকে এগুলোতে শুরু করেছিল। কিন্তু পানির স্তর নিয়ে গবেষণা করে কীভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ওপরে তোলা যায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষ সেই পানি ব্যবহার করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করছে।
বক্তারা আরো বলেন, শুধু পানির স্তর নিয়ে রিসার্চ করলেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বরেন্দ্র অঞ্চলে ভুগর্ভস্থ পানির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এজন্য পদ্মা, মহানন্দা নদী খননের মাধ্যমে এগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা দরকার। পাশাপাশি বরেন্দ্র অঞ্চলের পুকুর ও খাড়ি সংস্কারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তাহলেই খরা ও বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষের চাষাবাদ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় পানির অভাব নিরসন সম্ভব। এজন্য সবার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। উল্লেখ্য, রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশার প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি উক্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।